Intermittent Fasting (ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং)

Intermittent Fasting কি?

Intermittent fasting বা ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং মূলতঃ সেই ডায়েট প্ল্যানকে নির্দেশ করে যার মূল মনোযোগ "কি খাচ্ছি" এর উপরে নয়, বরঞ্চ "কখন খাচ্ছি" এর উপরে। 

এই ধরণের ডায়েটের মূল লক্ষ্য এটি নিশ্চিত করা যেন, আমরা দিনে একটা সময়কাল পর্যন্ত না খেয়ে থেকে নির্দিষ্ট সময়ে খাবার গ্রহণ করি অথবা সপ্তাহের কিছু দিন একবেলা খাবার গ্রহণ করে থাকি এবং তাও নির্দিষ্ট একটা সময়েই। এতে করে আমাদের শরীরের ফ্যাট বার্ণ হয় এবং এটি অন্যান্য অনেক ডায়েট প্ল্যান থেকে বেশি বিজ্ঞানসম্মত। 

আমরা যদি আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে নব্বই এর দশকের দিকেই তাকাই তাহলে দেখা যাবে, রাত এগারোটা এর পর টিভিতে ভালো অনুষ্ঠান নেই। মানুষ সে সময় ঘুমের প্রস্তুতি নিয়ে নিয়েছে। তখন মোবাইল, কম্পিউটার, ইন্টারনেট কিছুই সুলভ ছিলো না। তাই সাধারণ মানুষের রাত জাগার প্রয়োজন ছিলো না। তাদের খাওয়া হত নির্দিষ্ট সময় আর মাঝরাতে খাওয়ার প্রয়োজনীয়তা ছিলো না বললেই চলে, সেই সাথে মানুষ শারিরীক পরিশ্রম করত৷ লক্ষ্য করলে দেখা যাবে, তখনকার মানুষের শারিরীক অবস্থা এখনকার থেকে অনেক ভালো ছিলো। এর কারন নিয়মানুবর্তী খাওয়া এবং সময় মেনে কাজ করা। আর এখন রাত জাগার জন্য এক্সট্রা ক্যালোরি কিংবা কম শারিরীক পরিশ্রম সব মিলিয়ে আমরা অতিরিক্ত চর্বি জমিয়ে নিচ্ছি আমাদের শরীরে।

আরো পড়ুন : Fatty Liver (ফ্যাটি লিভার)

কীভাবে Intermittent fasting করা যায়?

এমন করা যেতে পারে আমরা দিনকে তিনভাগে ভাগ করবো। সেক্ষেত্রে আমরা ৮ ঘন্টা করে সময় পাই। এই আট ঘন্টা পর পর আমরা খাবার গ্রহণ করবো এবং এর মাঝে আর কিছুই খাবো না। অথবা এমন করা যায়, একটা সপ্তাহে আমরা দুইদিন কেবল একবেলা খাবো। এতে করে যা হবে, আমাদের শরীরে তৎক্ষনাৎ কিছু ক্যালোরির ঘাটতি তৈরি হয়৷ সে ঘাটতি মেটানোর জন্য আমাদের শরীর জমে থাকা চর্বি ভাঙ্গতে শুরু করে অথবা ফ্যাট বার্ণ করে। এই প্রক্রিয়া একটি সময় ধরে চলতে থাকলে দেখা যাবে আমরা ওজনের দিক থেকে সুফল পাওয়া শুরু করবো। 

ইন্টারমিটেন্ট  ফাস্টিং এর সুফল

  • হার্ট রেট এবং রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক করে।
  • তরুন বয়সীরা যারা ১৬ ঘন্টা করে এই ডায়েট ধরে রেখেছে, তাদের ক্ষেত্রে দেখা যায়, ফ্যাট বার্ণ হয়েছে কিন্তু মাসেল ম্যাসের কোনো পরিবর্তন হয় নি।
  • ডায়েবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে, স্থুলতা বা obesity থেকে মুক্ত থাকা যায়।
  • মানসিক স্বাস্থ্য এবং স্মৃতি সতেজ হয়।
  • ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো হয়।
  • স্ট্যামিনা বৃদ্ধি পায়।

কারা ইন্টারমিটেন্ট  ফাস্টিং করতে পারবে না

  1. ১৮ বছরের নিচের বাচ্চা - তাদের growing age. তাই এই সময়টা পুষ্টি নেওয়ার। 
  2. যেসব মহিলা প্রেগনেন্ট অথবা বাচ্চাকে দুধ খাওয়াচ্ছেন তাদের নিউট্রিশনিস্ট এর পরামর্শ নিতে হবে।
  3. যাদের Eating Disorder আছে। 
  4. যাদের Diabetes আছে এবং যাদের স্যুগার লেভেল হঠাৎ নেমে যায়, তাদের ডাক্তারের পরামর্শ মেনে ডায়েট প্ল্যান অনুসরণ করতে হবে। 

ইন্টারমিটেন্ট  ফাস্টিং নিয়ে কিছু প্রশ্ন উত্তর

Intermittent Fasting কি শরীরের জন্য খারাপ?

মোটেও না। তবে আমাদের শরীর যতটা নিতে পারে তার অতিরিক্ত চাপ নেওয়া অবশ্যই খারাপ। 

Fasting এর সময় কি পানি খাওয়া যাবে?

এই সময় পানি কিংবা জিরো ক্যালোরি ড্রিংক্স, চা, কফি পান করা যাবে। 

Fasting ভাঙ্গার সময় কি খাওয়া যাবে?

যেহেতু ইন্টারমিটেন্ট  ফাস্টিং এর মনোযোগ আমরা কখন খাচ্ছি এর উপরে তাই সাধারণত আমরা যা খেয়ে থাকি তা খেতে পারবো। তবে এই জন্য অবশ্যই আমাদের অনেক ক্যালোরিসহ খাবার খাওয়া উচিত না যা আমাদের শরীরের জন্য খারাপ। 

সকালের নাস্তা না খাওয়াটা কি ঠিক?

সাধারন লাইফ স্টাইলের জন্য অবশ্যই খারাপ। যারা সাধারণভাবেই সকালের নাস্তা করে না তারা দেখা যায় সারাদিনটাই অস্বাস্থ্যকর উপায়ে কাটিয়ে দেয়। কিন্তু যারা ইন্টারমিটেন্ট  ফাস্টিং করছে তারা পুরো দিন একটা নিয়মের ভিতর দিয়ে কাটায়। তাই এটি সমস্যা তৈরি করে না। 

Intermittent Fasting কি মেটাবলিজমকে ধীর করে দেয়?

রিসার্চ থেকে আমরা জানতে পারি এই ধরণের ডায়েট আমাদের মেটাবলিজমকে ধীর না করে উলটো ত্বরাণিত করে।