লাইফ স্টাইল

ডোপামিন বা Dopamine কি? ডোপামিন এর কাজ এবং ভারসাম্য রক্ষার উপায়

এক ধরণের নিউরোট্রান্সমিটার যা বিভিন্ন

এনজাইম বা Enzyme কি? এনজাইমের কাজ, প্রকারভেদ, আধিক্য ও অভাবজনিত সমস্যা

এনজাইম মূলতঃ প্রোটিন। ধারনা করা হয়, আমাদের

অ্যাড্রিনালিন হরমোন বা Adrenaline কি? অ্যাড্রিনালিন হরমোন এর কাজ

অ্যাড্রিনালিন হলো এড্রেনাল গ্লান্ড থেকে

গ্রোথ হরমোন বা Growth Hormone কি? গ্রোথ হরমোন বৃদ্ধির উপায়

গ্রোথ হরমোন আমাদের শারীরিক বৃদ্ধি ও উচ্চতার

কর্টিসল বা Cortisol  কি? কর্টিসল এর মাত্রা নিয়ন্ত্রণের উপায়

কর্টিসল হলো এক ধরণের স্টেরয়েড হরমোন যা

মেলাটোনিন বা Melatonin কি? এ হরমোনের কাজ

মেলাটোনিন এমন একটি হরমোন যা উচ্চ পরিমাণে

আমাদের সমাজে বসবাসরত প্রতিটা মানুষের জীবন পরিচালনার পদ্ধতি ভিন্ন ভিন্ন। একজন মানুষ যে উপায়ে তার জীবন যাপন পদ্ধতি পরিচালনা করে থাকুক না কেন, সেটিই হলো তার লাইফ স্টাইল। তবে আমাদের জীবনকে সুন্দর করতে একটি পরিকল্পিত লাইফ স্টাইলের বিকল্প নেই।

লাইফ স্টাইল বা Life Style  বলতে কি বুঝায়?

লাইফ স্টাইল বলতে একজন মানুষের জীবন-যাপন করার পদ্ধতিকে বুঝায় যেখানে তার খাদ্যাভ্যাস, আচার-আচরণ এমনকি প্রতিদিনের কাজের তালিকা ও অন্তর্ভুক্ত থাকে। 

এই ছোট একটি শব্দগুচ্ছের ব্যাপকতা অনেক। খাদ্যাভ্যাস, শরীর চর্চা, ঘুমের সময়সূচি, ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দ, মানুষের সাথে মেলামেশা, স্ট্রেস সামলানোর ক্ষমতা ইত্যাদি বিষয় লাইফ স্টাইলের মাঝে চলে আসে। ভালো একটি জীবন-ব্যবস্থা গ্রহণ করলে আমরা সামাজিক, মানসিক, শারীরিক সকলক্ষেত্রেই উপকার ভোগ করতে পারি।

লাইফ স্টাইল বেছে নিতে যা খেয়াল রাখতে হবে:

আমরা কীভাবে আমাদের জীবনকে সাজাবো এটি আমাদের ব্যক্তিগত ব্যাপার। কিন্তু আমরা যেহেতু একা বাস করি না, সেহেতু এটি অন্যদেরও প্রভাবিত করতে পারে। নিজের এবং সবার ভালোর জন্য লাইফ স্টাইল বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে কিছু বিষয় মাথায় রাখা উচিত। নিচে এই বিষয়গুলো দেওয়া হলো:

শরীর-চর্চা:

আমাদের শরীরকে ভালো রাখতে হলে শরীর-চর্চার কোনো বিকল্প নেই। নিয়মিত শরীর চর্চা আমাদের মন ও শরীর উভয়কে ভালো লাগে। শরীর ডোপামিন ক্ষরণ করে যার ফলে মন চাঙ্গা থাকে, কর্টিসল এর মাত্রা কমে আসে।

ডায়েট প্ল্যান:

শরীরকে সুস্থ রাখতে হলে একটি ভালো ডায়েট প্ল্যান খুবই জরুরি। আমাদের মাথায় রাখতে হবে খাদ্যাভ্যাস যেন খুব বেশি কঠোর না হয়ে পড়ে। এতে করে শরীর ভালো থাকার জায়গায় অসুস্থও হয়ে যেতে পারে আর অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাসকে তো আমাদের পুরোপুরিই বর্জন করা উচিত।

ঘুমের সময়সূচি ঠিক রাখা:

প্রতিদিনের কাজ সুন্দরমতো করার জন্য পরিমাণ মতো ঘুমের কোনো বিকল্প নেই। ঘুমালে শরীরে চাঙ্গা থাকে, ক্ষয় পূরণ হয় এবং মেটাবলিজম ঠিক থাকে।

স্ট্রেস কমানো:

মানসিক চাপ তৈরি করতে পারে এমন সব কিছু থেকে আমাদের দূরে থাকা উচিত। প্রয়োজনে মেডিটেশন, ঘোরাঘুরি, ইয়োগা ইত্যাদি করে মনকে চাপমুক্ত রাখা উচিত।

মানুষের সাথে যোগাযোগ রক্ষা:

মানুষ যেহেতু সামাজিক জীব সেহেতু আমাদের মানুষের সাথে বাস করতে হয়। আমরা একজন আরেকজনের সাথে যোগাযোগ করতে না পারলে আমাদের মনের উপরে তা প্রভাব ফেলে। ধীরে ধীরে হতাশা ও অবসাদ জায়গা করে নেয়। যার প্রভাব পড়ে আমাদের শরীরের উপরেও।

পরিকল্পিত লাইফ স্টাইলের গুরুত্ব:

জীবনকে সুন্দর করতে পরিকল্পিত লাইফ স্টাইলের কোনো বিকল্প নেই। নিচে এর চারটি গুরুত্ব দেওয়া হলো:

  1. শারীরিক সুস্থতা: সঠিক খাদ্যাভ্যাস, শরীর-চর্চা, ঘুমের সঠিক সময়সূচি সম্পন্ন লাইফ স্টাইল শরীরকে সুস্থ রাখে।
  2. মানসিক প্রশান্তি: ভালো কাজে পুরস্কৃত করতে শরীর ডোপামিন, সেরাটোনিন  ক্ষরণ করে। যা মানসিক চাপ কমায়। একই সাথে মানুষের সাথে কথা বললে, শরীর সুস্থ থাকলেও আমরা মানসিক প্রশান্তি পাই।
  3. আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি: একটি ভালো জীবন-প্রণালী আমাদের আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি করে। এর ফলে আমরা নিজেদের সামর্থ্য সম্পর্কে সচেতন হই, নিজেদের প্রতি যত্ন নেওয়া শুরু করি, নিজেকে নিজে সম্মান দেওয়া শিখি
  4. সামাজিক মিল-বন্ধন: সঠিক জীবন-ব্যবস্থা অবলম্বনের অর্থ হলো আমরা আমাদের সামাজিক দ্বায়িত্ব নিয়ে সচেতন যা সামাজিক সেতুবন্ধন তৈরি করতে পারে।

লাইফস্টাইল নিয়ে সতর্কতা:

লাইফ স্টাইল নিয়ে আমাদের কিছু ব্যাপারে সতর্ক হতে হবে। নিচে কিছু সতর্কতা দেওয়া হলো:

  • মাত্রাতিরিক্ত কায়িক পরিশ্রম বা শরীরচর্চা স্বাস্থ্যের জন্য হানিকারক। এটি শরীরে বড় আঘাত তৈরি করতে পারে।
  • খুব কঠোর ডায়েট প্ল্যান অনুসরণ অনেক সময় বিপদের কারণ হতে পারে। Eating Disorder দেখা দিতে পারে। ভিটামিন ও মিনারেল সমৃদ্ধ সুষম খাবারের দিকে নজর দিতে হবে। 
  • শরীরকে অতিরিক্ত পরিশ্রান্ত করা যাবে না। এতে কর্টিসল এর মাত্রা বেড়ে যেতে পারে। যার ফলে বেড়ে যাবে মানসিক চাপ।
  • নিজেকে অন্যের সাথে তুলনা করা যাবে না। এটি আমাদের শারীরিক, মানসিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক কোনো দিক থেকেই মঙ্গল বয়ে আনবে না।
  • সবচেয়ে বড় কথা, যে কোনো কাজে অবশ্যই ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে ।