থাইরয়েড কি?
থাইরয়েড হল কলারবোনের (collarbone) ঠিক উপরে এবং শ্বাসনালীর (ট্রাকিয়া) সামনের অংশে অবস্থিত একটি গ্রন্থি, যা আকারে ছোট প্রজাপতির মতো হয়ে থাকে।
থাইরয়েড গ্রন্থিটি দুটি লোবে বিভক্ত হয়ে থাকে, যা কেন্দ্রের দিকে ইস্থমাস (isthmus) নামক টিস্যুর সাহায্যে যুক্ত থাকে। রক্তনালীতে সমৃদ্ধ হবার কারণে প্রজাপতির পাখার মতো আকারের এই গ্রন্থিটি দেখতে লালচে-বাদামী রঙের হয়ে থাকে।
স্বাভাবিক অবস্থায় অর্থাৎ শারীরিক সমস্যাজনিত কোন কারণে স্ফীত না হওয়া পর্যন্ত গ্রন্থিটিকে অনুভব করা যায় না।
কন্ঠের গুণমানের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট স্নায়ুগুলো এই গ্রন্থির ভেতর দিয়ে যায় বলে, কোন ব্যক্তির কন্ঠস্বর কেমন হবে তা অনেকাংশেই এই গ্রন্থির উপর ভিত্তি করে হয়ে থাকে।
থাইরয়েড হরমোন
মানবদেহের জন্য অত্যন্ত জরুরী এমন একাধিক হরমোন বা প্রাণরস নিঃসৃত হয়ে থাকে এই গ্রন্থি থেকে। যাদেরকে একত্রে থাইরয়েড হরমোন বলা হয়ে থাকে। তবে এই গ্রন্থি থেকে উৎপন্ন হওয়া হরমোনগুলোর মধ্যে প্রধান হরমোনটির নাম থাইরক্সিন (Thyroxin ), যা চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় T4 নামে পরিচিত।
থাইরয়েড হরমোন পুরো মানবদেহ জুড়ে কাজ করে থাকে। বিশেষত শরীরবৃত্তীয় বিপাক, বৃদ্ধি, বিকাশ, তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজকে এই হরমোন প্রভাবিত করে থাকে। এছাড়াও বিভিন্ন শারীরিক ক্রিয়া, ক্যালরি ক্ষয় এবং হৃদস্পন্দনের হারও নিয়ন্ত্রণ করে এই হরমোন।
শৈশব এবং যৌবনে মস্তিষ্কের বিকাশের জন্য অপরিহার্য হিসেবে গণ্য হয়ে থাকে এই হরমোন।
মানবদেহে থাইরয়েড এর ভারসাম্য ব্যহত হলে বিভিন্ন ধরণের সমস্যা তৈরি হয়ে থাকে, যেমনঃ
- গলগন্ড - থাইরয়েড গ্রন্থির বৃদ্ধি
- হাইপারথাইরয়েডিজম - থাইরয়েড গ্রন্থি যখন শরীরের প্রয়োজনের চেয়ে বেশি থাইরয়েড হরমোন তৈরি করে
- হাইপোথাইরয়েডিজম - যখন আপনার থাইরয়েড গ্রন্থি যথেষ্ট থাইরয়েড হরমোন তৈরি করে না
- থাইরয়েড ক্যান্সার
- থাইরয়েড নোডুলস - থাইরয়েড গ্রন্থিতে পিণ্ড
- থাইরয়েডাইটিস - থাইরয়েড ফুলে যাওয়া